Israel News

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কাতার কীভাবে মধ্যস্থতাকারী হয়ে উঠলো?

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার সাথে বৈঠক করে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দোল্লাহিয়া।ছবির উৎস,

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার সাথে বৈঠক করে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দোল্লাহিয়া।

Article information

Author, Ariyan

Role, Ariyan Blog  

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক অস্ত্র বিরতির মধ্যস্থতা করার পর আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের গ্যাস সমৃদ্ধ দেশ কাতার। এ ঘটনার পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কাতার সূক্ষ্মভাবে আন্তর্জাতিক ভারসাম্য রক্ষায় নিজের ভূমিকা তুলে ধরেছে।


দেশটি একদিকে যেমন পশ্চিমাদের কাছে ‘জঙ্গি গোষ্ঠী’ হিসেবে পরিচিত সংগঠনগুলোর সাথে যোগাযোগ রেখে আসছে তেমনি আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পর্কও বাড়িয়ে যাচ্ছে।


গত ২৪শে নভেম্বর থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চার দিনের একটি অস্ত্র বিরতি শুরু হয়। পরে সেটি আরো দুইদিন বাড়ানো হয়। এই অস্ত্র বিরতির মধ্যস্থতা করেছে কাতার।


কাতারের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি একটি চুক্তির ঘোষণা করেন যার মধ্যে অস্ত্র বিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

চলতি সংঘাতের শুরু থেকেই মিশর আর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করে আসছিল কাতার।


আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি 'মোসাদ' যেভাবে ইরাক থেকে সোভিয়েত যুদ্ধবিমান ছিনতাই করে

২১ নভেম্বর ২০২৩

গাজা ইসরায়েল যুদ্ধের এক মাস: মৃত্যু আর ক্ষুধার বিভীষিকাসহ যা যা ঘটছে

৭ নভেম্বর ২০২৩

অসলো শান্তি চুক্তির পর ফিলিস্তিন সংকট কীভাবে বর্তমান পর্যায়ে এলো

৯ অক্টোবর ২০২৩

কাতারের যত মধ্যস্থতা

সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের অনেকগুলো দেশ নিজেদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরতে চায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মিশর, ওমান এবং কুয়েত। তবে এদের ছাপিয়ে ওই অঞ্চলে কাতারই সংকট সমাধান ও আলোচনার উদ্যোক্তা দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।


ইউক্রেন থেকে শুরু করে লেবানন, সুদান, ইরান, আফগানিস্তান এবং গাজা সংকটে মধ্যস্থতা করেছে কাতার।

২০১৭ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় ইরাকে আটক জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে সমঝোতায় সাহায্য করেছিলো কাতার। অবশ্য ওই জিম্মিদের মধ্যে কাতারের ক্ষমতাসীন পরিবারের কয়েক জন সদস্যও ছিলেন।


২০১৯ সালে আফগানিস্তানের তালেবানদের হাতে আটক দুই জন পশ্চিমা জিম্মির মুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলো কাতার। ২০২১ সালে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়ার বিষয়েও ভূমিকা রাখে দেশটি। আর চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে বন্দী বিনিময়েও কাজ করে দোহা।


কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ ঘাঁটি আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সৈন্য প্রত্যাহারের সময় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। একই সাথে কাতার তালেবানদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে সমঝোতা আলোচনায় স্বাগতিক দেশ হিসেবেও কাজ করেছে।


২০১৪ সালেও গাজায় ইসরায়েলি সংঘাতের সময়ে মধ্যস্থতা করেছিলো কাতার।

ফিলিস্তিনি বন্দীদের স্বাগত জানিয়ে রাস্তায় নেমে আসে বহু মানুষছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

ফিলিস্তিনি বন্দীদের স্বাগত জানিয়ে রাস্তায় নেমে আসে বহু মানুষ


পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ছোট দেশ হলেও তরল গ্যাস সমৃদ্ধ ধনী এই দেশটি একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেকে অপরিহার্য হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে, একই সাথে প্রতিবেশী দুই বড় দেশ সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চেয়েছে। যার কারণে সংঘাতের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আবির্ভূত হতে চেয়েছে দেশটি।


মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক আতেফ আল-শায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''কাতার এরইমধ্যে বিশ্বের বেশ কিছু ঘটনায় যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে সফলভাবে মধ্যস্থতা করেছে। বিশেষ করে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বন্দী বিনিময়ে কাতার ভূমিকা পালন করেছে।''

আমেরিকান ও তালেবানদের মধ্যে মধ্যস্থতায়ও কাতার সফল হয়েছে। ফলে মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে কাতার আসলেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।


“মানবিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সংকট সমাধানে কাতার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ সংঘাতে যুক্ত থাকা দুই পক্ষের ব্যক্তিরাই কাতারে রয়েছে। আর কাতার নিজেও এই ভূমিকায় নিজেকে তুলে ধরতে চায়,” তিনি বলছেন।


‘সবার সাথে বন্ধুত্ব?’

১৯৯৫ সালে শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি কাতারের আমির হওয়ার পর থেকে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে নিজেকে মধ্যস্থতাকারীর জায়গায় প্রতিষ্ঠা করে।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যেসব ‘রাষ্ট্র নয় এমন সত্ত্বা’ যেমন বিভিন্ন আদিবাসী ও সশস্ত্র-বাহিনী- যাদের সাথে আলোচনায় প্রস্তুত নয়, এমন সব প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীগুলোর সাথেও আলোচনা করে কাতার।


সময়ের সাথে সাথে এসব গোষ্ঠীর তালিকায় যুক্ত হয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী, হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য সংগঠন যেমন ইসলামিক জিহাদ।

বার্তা সংস্থাগুলো অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, কাতারে আশ্রয় নিয়েছেন হামাসের শীর্ষ নেতা খালেদ মাশাল যিনি ১৯৯৭ সালে জর্ডানে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যান। এছাড়া হামাসের সুপ্রিম লিডার ইসমাইল হানিয়েহ কাতারে বাস করেন।


ইরানের সাথেও কাতারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কয়েক বিলিয়ন ডলারের যৌথ প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে তাদের।


গত কয়েক দশকে এ ধরনের সম্পর্ক কাতারকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে যেখানে দেশটি এই গোষ্ঠীগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং ইসরায়েলের চুক্তির বিষয়ে মধ্যস্থতা করে থাকে। দুই পক্ষের হয়েই চুক্তির বিষয়ে দরকষাকষি করে এই দেশটি।


এই অবস্থাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা “সবার বন্ধু, কারো বন্ধু নয়” বলে উল্লেখ করেছেন।


আরো পড়তে পারেন:

সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গাজায় কী হতে যাচ্ছে?

২৭ নভেম্বর ২০২৩

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধটি যে কারণে অন্যসব যুদ্ধ থেকে আলাদা

২৬ নভেম্বর ২০২৩

মধ্যপ্রাচ্যে শিয়া-সুন্নি মতভেদ যেভাবে প্রভাব ফেলেছে ফিলিস্তিনেও

২৪ নভেম্বর ২০২৩

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের সাথে চুক্তির সময় কাতারে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরাছবির উৎস,

ছবির ক্যাপশান,

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের সাথে চুক্তির সময় কাতারে দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা

হামাস ও ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক

বেশিরভাগ মুসলিম দেশের মতোই ফিলিস্তিনের সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে কাতারের এবং দেশটি দুই রাষ্ট্রের সমাধানকে সমর্থন করে।


২০১২ সালে সাবেক আমির শেখ হামাদ প্রথম কোনো আরব নেতা হিসেবে গাজা সফর করেন। কাতার বছরে হামাসকে প্রায় এক বিলিয়ন পাউন্ড দেয় বলে স্কাই নিউজের এক খবরে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া হামাসের রাজনৈতিক শাখা রয়েছে দোহায়। হামাসের বেশ কয়েক জন নির্বাসিত নেতারও ঠিকানা এই দোহা।


একই সাথে ইসরায়েলের একটি ‘ট্রেড অফিস’ও রয়েছে দোহায়। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে কাতারেই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত।


হাজার হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে আল উদেইদ এয়ার বেইজ বা আল উদেইদ নামে এই বিমান ঘাঁটিতে। এখান থেকে নিয়মিত সামরিক অভিযান পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র।


বিশ্লেষকরা বলছেন, তার মানে হচ্ছে, এখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজেদের স্বার্থের পক্ষে কাজ করতে পারে।

১৯৯৬ সালে প্রথম গালফ রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছিল কাতার। কিন্তু ২০০৯ সালে এটি আবার ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ছেদ করে গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর।


২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইনের মতো মধ্যপ্রাচীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন করলেও কাতার বিরত ছিল।


ইসরায়েলে হামাসের হামলার জন্য ইসরায়েলকেই দায়ী করে কাতার। তারা এই হামলার নিন্দা জানায়নি। উল্টো তারা গাজায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে।


“বিশ্বাসযোগ্য পক্ষ”

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বা এপি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র নেটোর বাইরে কাতারকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মনে করে।


বাইডেন প্রশাসন জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কাতারের ভূমিকার বার বার প্রশংসা করেছে এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন অতি সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে তার কূটনীতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে কাতার সফর করেছেন।


মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এর আগে ইসরায়েলের জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কাতারকে নিয়ে বলেন, “কাতার আমাদের দীর্ঘদিনের অংশীদার এবং তারা আমাদের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে। কারণ আমার মনে হয়, তারা বিশ্বাস করে যে, নির্দোষ বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি দেয়া উচিত।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কাতারকে পশ্চিমা দেশগুলো “বিশ্বাসযোগ্য পক্ষ” হিসেবে দেখে। কারণ তাদের চোখে কাতার হচ্ছে এমন একটি দেশ যারা আঞ্চলিক রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতিও বোঝে। কাতারের মধ্যস্থতায় এ পর্যন্ত যেসব চুক্তি হয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো লাভবানই হয়েছে।


ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্র বিরতির মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতারের উঠে আসার পেছনে নানাবিধ কারণ রয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।


কিংস কলেজ অব লন্ডনের সহযোগী অধ্যাপক এবং কাতার বিশ্লেষক ড. ডেভিড বি রবাটর্স বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''কাতারের মধ্যস্থতাকারী হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে হামাসের সাথে দেশটির ভাল সম্পর্ক।''


আরো পড়তে পারেন:

ইন্তিফাদা, পশ্চিম তীর, হেজবুল্লাহ ফিলিস্তিন ইসরায়েল সংকটের আটটি দিক

১৩ অক্টোবর ২০২৩

গাজা ডায়েরি- জানি না যেদিন আমাদের কাহিনী প্রকাশ পাবে, ততদিন আমরা বাঁচব কি না

১৩ নভেম্বর ২০২৩

ইসরায়েলকে রক্ষা করতে কতদূর যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র?

২৪ অক্টোবর ২০২৩

ড্যানিয়েল আলোনি ও তার মেয়ে এমিলিয়াকে শুক্রবার রাতে ছেড়ে দিয়েছে হামাসছবির উৎস,HOSTAGES AND MISSING FAMILIES FORUM

ছবির ক্যাপশান,

ড্যানিয়েল আলোনি ও তার মেয়ে এমিলিয়াকে শুক্রবার রাতে ছেড়ে দিয়েছে হামাস

তিনি বলেন, এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল- দুই পক্ষই চেয়েছে, কাতার যাতে এই সমঝোতা প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসে এবং তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।


“তারা চেয়েছে এবং তাদের এটা দরকারও ছিল এমন একজন মধ্যস্থতাকারীর যারা হামাসের সাথে আলোচনা করতে পারবে। হামাসের সাথে কাতারের আগে থেকেই সম্পর্ক থাকার কারণে এই ভূমিকা পালন করতে পেরেছে দেশটি।”


একই সাথেমধ্যস্থতাকারী হিসেবে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি পালনে কাতার বেশ আগ্রহী ছিল। কারণ কাতার মধ্যপ্রাচ্যে তো বটেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেকে একটি সাহায্যকারী দেশ হিসেবে তুলে ধরে সুনাম কুড়াতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও কাতার নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণ করতে চায়।


“কাজেই এর পেছনে কোন একটি বিষয়কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে,” বলেন মি. ডেভিড।


মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ মুরাদ আসলান বিবিসি বাংলাকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে কাতার মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে উঠে এসেছে কারণ তারা এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনেকটা অনুমোদনই নিয়েছে। দ্বিতীয়ত, দুই পক্ষের সাথেই আলোচনার জন্য কাতার হচ্ছে একটি দ্বার।

কাতারকে বেছে নেয়ার কারণে হিসেবে তিনি বলেন, ''সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেছে নেয়া যেতো না কারণ দেশটির সাথে হামাসের সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এছাড়া ফিলিস্তিনের বিরোধিতা করে এমন কিছু ব্যক্তিও আমিরাতে বাস করে। ফলে হামাস এখানে সমঝোতা এগিয়ে নিতে আগ্রহী হবে না। এই সব কারণ মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাতারই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।''


তুরস্ক নয় কেন?

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্র বিরতির ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তুরস্ক। কিন্তু তাদেরকে বেছে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল।


তুরস্ককে বেছে না নেয়ার কারণ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক আতেফ আল-শায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''তুরস্কের তুলনায় কাতার যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো মিত্র। কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের একটা ঘাঁটিও রয়েছে। হামাসেরও ঘাঁটি রয়েছে কাতারে।''


তিনি মনে করেন, ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে এখন সুসম্পর্ক যাচ্ছে না। কারণ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিষয়ে সব সময়ই সমালোচনা করে আসছে।


দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দুই দেশই এমন একটি দেশকে চাইছিলো যারা আসলেই সমঝোতায় ভূমিকা রাখতে পারবে।

মি. আল-শায়ের বলেন, তারা কাতারকে বেছে নিয়েছে কারণ, মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে কাতারের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং ঐতিহ্যগতভাবেই কাতার এ ধরনের সংঘাতের সমাধান করে আসছে।

No comments:

Post a Comment

What is Accounts Receivable Financing

  What is Accounts Receivable Financing? Ariyan Mahmudul November 29, 2023 Accounts Receivable Financing is a type of financing arrangement ...